বাগমারায় পাঁচ বছর ধরে মুক্ত পাখিকে খাবার দেন পাখিপ্রেমিক

বাগমারায় পাঁচ বছর ধরে মুক্ত পাখিকে খাবার দেন পাখিপ্রেমিক

বাগমারায় পাঁচ বছর ধরে মুক্ত পাখিকে খাবার দেন পাখিপ্রেমিক

বাগমারা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের আলোকনগর গ্রামের মৃত মেছের আলী ওরফে মাছু মন্ডল এর ছেলে লুৎফর রহমান বিগত পাঁচ বছর ধরে শত শত মুক্ত পাখির মাঝে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। আলোকনগর বাজারের মাদ্রাসা মার্কেটের সামনে লুৎফর রহমান এর চা স্টলের পার্শ্বে প্রতিদিন সকালে পাখিদের খাবার দেয়া হয়। পাখিদের প্রতি লুৎফর রহমানের এমন ভালবাসা দেখে এলাকায় তিনি পাখিপ্রেমি লুৎফর বলে পরিচিত।

জানা যায়, উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের আলোকনগর বাজারের মাদ্রাসা মার্কেটের সামনে লুৎফর রহমান এর একটি টিনসেডের তৈরি চা-স্টল রয়েছে। তার দোকানে কেক, বিস্কুট, ছোলা, পেঁয়াজুসহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি হয়। তার চা-স্টল কে ছোট-খাটো রেস্টুরেন্টও বলা হয়ে থাকে। তার দোকানের পেছনে রয়েছে টিউবওয়েল ও চা তৈরির স্থান। পাশেই ফাঁকা জায়গা।

সকালে বিক্রির জন্য নাস্তা ও আলুর তৈরি সিঙ্গাড়া ভেঙ্গে ছিটিয়ে দেয়ার পর শত শত পাখি এসে ওই খাবার খায়। প্রতিদিন তার দোকানে বিক্রির জন্য তৈরি করা ২০/৩০টি সিঙ্গাড়া ভেঙ্গে পাখিদের মাঝে পরিবেশন করে যাচ্ছেন পাখিপ্রেমি লুৎফর রহমান। এতে প্রতিদিন আর্থিকভাবে তিনি ক্ষতির মুখে পড়লেও শুধুমাত্র পাখির প্রতি ভালবাসার টানে তিনি তা করে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সকালে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত অন্তত আধাঘণ্টা ধরে লুৎফরের ওই চা-স্টলের পেছনে শালিক, বুলবুলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সমারোহ দেখা যায়। তাদের কিচিরমিচির ধ্বনি স্বচক্ষে দেখার জন্য স্থানীয়রা ভীড় জমায়। লুৎফর রহমান জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে টিউবওয়েলের সামনে বাসনপত্র পরিষ্কার করার সময় কিছু উচ্ছিষ্ট খাবার খাওয়ার জন্য কয়েকটি পাখি আসে। মাস খানেক হাতে গোনা কয়েকটি বুলবুলি পাখিকে দেখা যেতো। লুৎফর নিয়মিত তাদের জন্য খাবার পরিবেশন করতে আরম্ভ করেন। তারপর থেকেই পাখিদের আসা-যাওয়া বৃদ্ধি পায়।

এভাবেই শত শত পাখি ভোরবেলা থেকেই তার দোকানের আশেপাশে বিভিন্ন গাছের ডাল ও দোকানের ছাদে অবস্থান নেয়। খাবার দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলো উড়ে এসে খাবার খেয়ে চলে যায়। লুৎফর জানান, পাখিরা যেন তার অতিথি। প্রতিদিন অতিথিদের খাবার জোগাড় করতেও তাকে হিমশিম খেতে হয়। সংসারের টানাপোড়েনের মাঝে তার ছোট ওই দোকানে যে বেঁচা-কেনা হয় তা দিয়ে কষ্ট করেই চলতে হয় তাকে।
তিনি বলেন, তার সংসারের খরচ মেটানোর চিন্তার চেয়ে বর্তমানে পাখিগুলোর প্রতিদিনের খাবার যোগাড়ের চিন্তা করতে হয় তাকে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply